আজম খানের সংগীত জীবনের শুরু ষাটের দশকের শুরুতে। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় তিনি ‘ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী’র সক্রিয় সদস্য ছিলেন। পাশাপাশি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণের বিরুদ্ধে গণসংগীত প্রচার করেন। সরাসরি মুক্তিযুদ্ধেও অংশ নেন আজম খান।
১৯৭১ সালের পর লাকী আখন্দ, হ্যাপী আখন্দ, নিলু, মনসুর ও সাদেককে নিয়ে গড়ে তোলেন ব্যান্ডদল ‘উচ্চারণ’। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে বিটিভিতে আজম খানের ‘এত সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে’ ও ‘চার কালেমা সাক্ষী দেবে’ গান দুটি সরাসরি প্রচারিত হলে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
১৯৭৪ সালে বিটিভিতে ‘বাংলাদেশ’ গানটি গেয়ে সারা দেশে হৈচৈ ফেলে দেন আজম খান। বন্ধু ইশতিয়াকের পরামর্শে সৃষ্টি করেন একটি এসিড-রক ঘরানার গান ‘জীবনে কিছু পাব না’। বাংলা গানের ইতিহাসে এটিই প্রথম হার্ডরক সংগীত বলে বিবেচিত।
১৯৮২ সালে ‘এক যুগ’ নামে আজম খানের প্রথম অডিও অ্যালবাম বাজারে আসে। তার একক অ্যালবামের সংখ্যা ১৭ এবং দ্বৈত ও মিশ্র অ্যালবাম ২৫টির বেশি।
আজম খানের গাওয়া উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয় গানের তালিকায় আছে, ‘আলাল ও দুলাল’, ‘অনামিকা’, ‘হারিয়ে গেছে’, ‘বাংলাদেশ’, ‘ওরে সালেকা ওরে মালেকা’, ‘আসি আসি বলে’, ‘আমি যারে চাইরে’, ‘পাপড়ী’, ‘অভিমানি’, ‘এই গান শেষ গান’ ইত্যাদি।
ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধ করে ২০১১ সালের ৫ই জুন সবাইকে কাঁদিয়ে পরপারে পাড়ি জমান সবার প্রিয় আজম খান। গানের মধ্য দিয়ে এই পপ সম্রাট অমর হয়ে আছেন, থাকবেন চিরকাল।